চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস, গণহত্যায় অভিযুক্ত পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মী। ক্ষমতাকে জনসেবার পরিবর্তে হালুয়া রুটি গণ্য করা আওয়ামী লীগ সরকারের হয়ে বসেছেন সিডিএ চেয়ারম্যানের চেয়ারে। গত ২৪ এপ্রিল সিডিএ চেয়ারম্যান পদে যোগ দেয়া ইউনুস তার অল্প সময়ে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন।
সর্বশেষ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পড়াশোনা না থাকা সত্ত্বেও এ.জি.এম সেলিম নামের এক নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিয়োগ দিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন।

৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউনুস আত্মগোপনে আছেন। আত্মগোপনে থেকে তিনি গত ১৫ আগস্ট এই নিয়োগ দেন। যা সিডিএ সচিব রবীন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে।

অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, সিডিএর ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস ভারপ্রাপ্ত হিসেবে এতদিন প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-১ এবং চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুর হাসান ও আশরাফুল ইসলামকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মঞ্জুর হাসান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-১এর দায়িত্ব বুঝে নিবেন। একই সঙ্গে নির্মাণ বিভাগ-২, ৩ এবং ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানিং বিভাগের কাজের তদারকি করবেন।
আশরাফুল ইসলাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পাশাপাশি এরিয়া প্ল্যানিং বিভাগের কাজের তদারকি করবেন।
আর নির্বাহী প্রকৌশলী এ.জি.এম সেলিম প্রধান প্রকৌশলী শামস থেকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের দায়িত্ব বুঝে নিবেন।

প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের পদটি সিডিএর ৩য় গ্রেডের পদ। যে পদে পদোন্নতির শর্ত হচ্ছে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি এবং উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে ন্যূনতম ১০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সিডিএতে বর্তমানে সাতজন নগর পরিকল্পনাবিদ আছেন যাদের ৫ জন বুয়েট ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সদস্য। তাদের পাশকাটিয়ে যে বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিমের পড়াশোনাই নেই তাকে নিয়োগ দিলেন চেয়ারম্যান ইউনুস।

এছাড়াও সিডিএর গ্রেডেশন লিস্ট অনুযায়ী পরিকল্পনা বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা। সে হিসেবে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ নেই।

এমন অনিয়মের বিষয়ে জানতে সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুসের মুঠোফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। জানা গেছে গত ৫ আগস্ট ছাত্রদের গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশত্যাগ করলে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের এই নেতাও।

চট্টগ্রাম নিউমার্কেট মোড়ে ছাত্রদের গণজমায়েত চলাকালে সিডিএর বোর্ড মিটিং ছিল। সেই মিটিংয়ে বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ না হলেও বিলের বিপরীতে তড়িগড়ি কয়েকটি চেক স্বাক্ষর করা হয়েছে। সিডিএর ফান্ড থেকে টাকা সরাতে এসব চেক স্বাক্ষর করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন সিডিএ সংশ্লিষ্টরা।

আরও খবর