আওয়ামী সন্ত্রাসী এবং ফ্যাসিবাদের পর এখন আরেকটি গোষ্ঠী চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে (সিজেকেএস) দখল করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সিজেকেএস অ্যাডহক কমিটি বাতিল চেয়ে মেয়র বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি একটি এডহক কমিটি হয়েছে সিজেকেএসের। সেখানে কোন খেলোয়াড়, কোচ কিংবা সিজেকেএসের কোনো কর্মকর্তার নাম আমরা দেখছি না, এটা আমাদের অবাক করেছে। কারণ এ ৪৩টি ইভেন্ট পরিচালনা করার তাদের আদৌও যোগ্যতা কিংবা দক্ষতা আছে কিনা আমাদের সন্দেহ রয়েছে। সেই এরকম কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করার জন্য আমি বলছি। এখানে যারা কোচ, খেলোয়াড়, প্রাক্তন খেলোয়াড়, সিজেকেএসের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক আছে, তারা এখানে নেতৃত্ব দিবে এবং এটাই হয়ে এসেছে।

তিনি বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর কাজীর দেউড়ী এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে এসব কথা বলেন।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র, স্টেডিয়ামকে ২৫ বছরের জন্য বাফুফেকে লিজ দেয়া ও সিজেকেএসের এডহক কমিটি বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে চট্টগ্রামের বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া কর্মকর্তা, সাবেক খেলোয়াড়, ক্রীড়া সংগঠক, কোচ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।

এসময় চসিক মেয়র বলেন, যে স্টেডিয়ামটি সবসময় চট্টগ্রামের খেলোয়াড় প্রোডাকশনের জন্য একটা ফ্যাক্টরি হিসেবে কাজ করেছে। এই মাঠ থেকে বাংলাদেশের বরেণ্য ক্রিকেটার মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খান এবং তামিম ইকবালদের মতো বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়কদের জন্ম হয়েছে। ফুটবলে আশিশ ভদ্র, দিপু, এফআই কামাল, মামুন, নাজিমসহ অনেকেই এ চট্টগ্রাম থেকে হাতেকড়ি হয়েছে, এই স্টেডিয়াম থেকে। দুর্ভাগ্যের বিষয় আজকে খুবই খারাপ লাগে এই যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রজনতার অকাতরে রক্ত দিয়েছে, শ্রমিক জনতা প্রাণ দিয়েছে। ১৬ বছর ধরে আমরা একটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ঠিক তখনই এই চট্টগ্রামকে আবারও বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী, ফ্যাসিবাদীরা এতদিন ধরে নেতৃত্ব দিয়েছে, খেলোয়াড়দের তারা কুক্ষিগত করেছে। আবারও আমরা দেখছি, এ ধরনের একটি গোষ্ঠী এসব করতে চাচ্ছে। এটা কখনো চট্টগ্রামের আপামর জনতা, জনসাধারণ, ক্রীড়ামোদি, ক্রীড়া সংগঠকরা মেনে নিবে না। এই চট্টগ্রামের যে স্টেডিয়ামটি সিজিকেএসের ৪৩টি ইভেন্ট পরিচালনা করে, যেখানে ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবলসহ ৪৩টি ইভেন্ট যার মাঠে হয়। অথচ কোনো কারণ ছাড়াই আমরা দেখতে পেয়েছি একদিন সকালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে ২৫ বছরের জন্য ইজারা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সিএমইউজের সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ মো. খান, ইসমাইল বালি, ক্রীড়া সংগঠক ইস্কান্দার মির্জা, মশিউল আলম স্বপন, সিজেকেএস’র সাবেক সহ সভাপতি এড. শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আবুল বশর, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, নির্বাহী সদস্য একেএম আব্দুল হান্নান আকবর, আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার শহীদুর রহমান, সিজেকেএস এ মেয়রের প্রতিনিধি আবদুল আহাদ রিপন, জাতীয় দলের খেলোয়াড় নাজিম উদ্দিন, ক্রিকেট কোচ মাসুম উদ্দৌলা প্রমূখ।

আরও খবর